রবিবার, ৯ জুন, ২০১৩

ভালবাসার বৃষ্টি (গল্প)

এই সোনিয়া দেখ দেখ সেই ছেলেটা, আজকেও কলেজের সামনে দাড়িয়ে আছে’ জানালার পাশ থেকে ফারিহা ডাক দেয়। বেশ কিছুদিন ধরেই ছেলেটা কে দেখছে ওদের পেছনে ঘুরঘুর করছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল কার পেছনে ঘুরছে সেটা বের করতে পারছে না ওরা চার বান্ধবী। কারন ওরা চারজনই এক সাথে কলেজে আসে আবার এক সাথেই বের হয়ে যায়, ঘুরতে গেলেও একসাথে। তাই ছেলেটা ওদের কে যখনই দেখে এক সাথে। কাকে পছন্দ করে সেটা একে অন্যের উপরে চাপিয়ে দিলেও প্রত্যেকের মনে সূক্ষ্ম আশা ছেলেটা যেন তার পেছনে ঘুরে। এই ফিল টা প্রত্যেক মেয়ের কাছেই অনেক স্পেসাল। ফারিহার ডাক শুনে সোনিয়া, তন্বী দৌড়ে আসে। মীম যেখানে ছিল সেখানেই বসেই থাকে। দেখছে ছেলেটাকে, বুঝলি সোনিয়া ছেলেটার মোটেও ড্রেস সেন্স ভাল না, দেখছিস কি পড়ে আছে, ক্ষেত কোথাকার, তন্বী বলে উঠে। আরে ধুর এই ছেলের আবার ড্রেস সেন্স। কি যে বলিস, সায় দেয় সোনিয়া। এই মীম তুই বসে বসে কি করছিস, বিদ্যাসাগরের ছোট বোন হতে চাস? এদিকে আয় ছেলেটা কে দেখ, মনে হয় তার আর কাপড় নেই, বলে হিহি করে হেসে উঠে ফারিয়া। বিরক্ত হয় মীম। ফারিহা দেখতে অনেক সুন্দর, সম্ভবত কলেজের সেরা সুন্দরী। প্রায়ই দেখা যায় কিছু ছেলে পেলে ওর পেছনে ঘুরছে। তাতে অবশ্য ফারিয়া বেশ মজাই পায়। অনিচ্ছাসত্ত্বেও জানালার পাশে গিয়ে দাড়ায়। ছেলেটা ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে। দূর থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না তারপরও মীম এর কাছে ছেলেটাকে অনেক কিউট লাগল। মীম ফারিহার মত আহামরি সুন্দর না হলেও আট দশটা মেয়ের সাথে দাড়ালে ওকে আলাদাই লাগবে।

ক্লাস শেষ করে ওরা যখন কলেজ থেকে বের হচ্ছে তখনও ছেলেটি সেই একি জায়গায় দাড়িয়ে। চল ওকে গিয়ে ধমক দেই,প্রস্তাব দেয় সোনিয়া। তন্বী, ফারিহা তো এক পায়ে খাড়া, বাধা দেয় মীম। আরে বাদ দে। বাসায় কাজ আছে, চল চলে যাই। এই দাড়া, তুই এত ভীতু কেন রে মীম? ছেলেটাকে ভড়কে দিব, অনেক মজা হবে, তন্বী বলে উঠে। কি আর করা ইচ্ছে না থাকলেও মীমকে যেতে হয়।

এই আপনি আমাদের পিছু নেন কেন? কলেজের সামনেও প্রায়ই দাঁড়িয়ে থাকেন, আপনার সমস্যাটা কি? আপনি জানেন ইভটিজার বলে আপনাকে পুলিশে দিতে পারি? সোনিয়া বেশ রাগী রাগী ভাব নিয়ে বলল, আশা করল ছেলেটা ভয় পাবে।

কিন্তু ছেলেটা ভয় তো পেলই না বরং ওদের অবাক করে দিয়ে সুন্দর হাসল। বলল, না আপনারা পারেন না, কারন আমি তো ইভটিজিং করিনি বরং আপনারা এখানে এসে আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। জানেন আপনাদের বিরুদ্ধে ১৫৭ ধারার কেস করতে পারি? নিরীহ একটা ছেলেকে হুমকি দেবার অজুহাতে। থতমত খেয়ে যায় সোনিয়া, চুপ করে থাকে সে।

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৩

কেমন আছেন আপনি?


আকাশ দিকে ঘাড় উঁচু করে উদাস মনে হাঁটছিল অমি(ছদ্মনাম)। ধাক্কা খাওয়ার সাথে সাথেই থমকে দাঁড়ালো সে এবং মানুষটা। আনুমানিক ৬০-৬৫ বছরের বেশি হবে বয়স। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলেন অমির দিকে। অমি সাথে সাথে বলল, ‘সরি, ব্যাথা পাননি তো? কেমন আছেন আপনি?’
কিছু বললেন না। কেবল ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টির মাঝে শুন্যতাটা আর বেশি লক্ষ করলো সে। অমি আবার বলল, ‘আপনি ভালো আছেন?’ এবারও উত্তর মিলল না। চামড়ার নীচে কিলবিল করা হালকা নীলচে রক্তনালীসমৃদ্ধ একটা হাত তিনি অমির বাম কাঁধে রাখলেন। অমি টের পেল হাতটা একটু একটু কাঁপছে। একটু পর কাঁপা কাঁপা গলায় বুড়ো লোকটি বললেন, ‘কফি খাওয়ার অভ্যাস আছে তোমার?’
‘আছে, তবে মাঝে মাঝে।‘
‘ও! তোমাকে তুমি করে বলা যাবে তো?’
‘অবশ্যই!’
মানুষটা অভিবাবকসুলভ অমির হাতটা ধরে এগিয়ে যেতেই ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ও দুঃখিত, তোমার সময় আছে তো?’
আপাতত বেকার অমি, কোন কাজ মেলেনি এখনও। বলল, ‘অসুবিধা নেই, চলুন।