By- Fabiha Nisa
অনন্যা আয়নার দিকে মুখ করে তার লম্বা চুলে চিরুনি দিচ্ছিল। এমন সময় তার মা এসে বলে, “দে চিরুনি দে আমাকে, আমি বেণী করে দেই”। “না মা, আমি পারব এবং তোমার চেয়ে আরও ভাল বেণী করে দেখাবো”। যদিও অনন্যা চোখ দিয়ে পৃথিবীর কোন আলো দেখতে পায় না, তবুও আয়নার দিকে মুখ করে চুল আঁচড়াতে তার মন্দ লাগে না, বরং বেশ ভালোই লাগে।
ষোল বছর বয়সী অনন্যা অন্ধ হলেও সবধরনের কাজ সে খুব সহজেই করে ফেলতে পারত। এলাকায় এমন কথাও শোনা যেত যে অনন্যার আধ্যাত্মিক জ্ঞান আছে। গল্প বলার এ পর্যায়ে এসে দীপ্তি তার ছোট বোনকে বলে, “গল্পের বাকি অংশ পরে শুনিশ। এখন ঘুমাতে যা, রাত হয়েছে”। “না আপু, তুই এখনি বল, গল্প শেষ না করলে ঘুম আসবে না”, দিয়া জেদ করে। দুই বোন পিঠাপিঠি হওয়ায় সারাদিন এক সাথে লেগে থাকে। কিন্তু দীপ্তি বুঝিয়ে বলে যে এক্ষণই মা এসে তাদের বকা দিয়ে যাবে। দিয়া নিজের রুমের উদ্দেশ্যে যাওয়ার আগে তার বড় বোনকে জিজ্ঞেস করে, “আপু, এটা কি তুই তোর নিজের জীবন কাহিনী বলছিস?” “ধুর! আমারটা কেন হতে যাবে? তুই কি মনে করিস পৃথিবীতে তোর বড় বোন ছাড়া আর কোন অন্ধ নেই”? দিয়া হেসে রুম থেকে চলে যায়।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই দিয়া তার বোনের রুমে যায়। গিয়ে দেখে মা দীপ্তির চুলে বেণী করে দিচ্ছে। দিয়া আহ্লাদের স্বরে বলে, “কি মা! তুমি খালি আপুকেই আদর করো”। “বেশি প্যাঁচাল পারিস না, সকাল দশটায় ঘুম থেকে উঠার পর আবার বড় বড় কথা! যা পড়তে বয়”। এই বলে মা রুম থেকে চলে যায়। দিয়া অস্থির হয়ে তার আপুকে গল্প শুরু করতে বলে। দীপ্তি মুচকি হেসে গল্প শুরু করে।